আপনি কি ইসলামিক বই খুঁজছেন? আপনি যদি একজন মুসলমান বা অন্যান্য ধর্মাবলম্বী হয়ে থাকেন তবে ইসলামিক বই পড়া আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই বইগুলোর মাধ্যমে আপনার জীবনে বিশাল পরিবর্তন হতে পারে ইনশাল্লাহ। আল্লাহর জ্ঞান ও মহিমা সম্পর্কে জানার কোন শেষ নেই। তো আপনি যদি ইসলামিক বই পড়তে ভালোবাসেন তবে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য। এই নিবন্ধে আমরা সেরা ১০ টি ইসলামিক বই সম্পর্কে আলোচনা করব যা আপনার জীবনকে বদলে দিতে পারি ইনশাল্লাহ। নিচে সেরা দশটি ইসলামিক বই সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
সেরা ১০টি ইসলামিক বই
প্রত্যেককে এই “সেরা ১০টি ইসলামিক বই” একবার হলেও পড়া উচিত। কুরআান আর হাদীসের কম্বিনেশনে প্রতিটি লেখা-ই জীবন পথে সুন্দর দিকনির্দেশনার একটি ভাল উৎস হিসেবে কাজ করবে।আমরা অনেকেই ইসলামিক বই পড়তে পছন্দ করি। বর্তমানে অসংখ্য ইসলামিক বই রয়েছে। কিন্তু কোন বই গুলো সেরা? কোন বইগুৈলো আমাদের একবার হলেও পড়া আবশ্যক। কোরআনএবং বিশুদ্ধ হাদিস থেকে যে শিক্ষা পাওয়া যায়, সেটাই হলো আসল শিক্ষা। এই পৃথিবীর সমস্ত বিষয়ের সমাধান কোরআন এবং সুন্নাহ্ তে রয়েছে। আজ আমরা আপনাকে বলব কোন বইগুলো পড়া উচিত এবং যে সেরা ১০টি ইসলামিক বই রয়েছে সেগুলো নিয়েই আজ আপনাদের কাছে গুরুত্ব তুলে ধরব ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ লেখককে উত্তম প্রতিদান দান করুন। (আমিন)
- হিসনুল মুসলিম
- বেলা ফুরাবার আগে
- ইসলামী আকীদা
- আদর্শ মুসলিম
- তিনিই আমার রব
- টাইম ম্যানেজমেন্ট
- রাসূলের চোখে দুনিয়া
- সাহাবিদের চোখে দুনিয়া
- তাবিয়িদের চোখে দুনিয়া
- প্রোডাক্টিভ মুসলিম
বই-০১ হিসনুল মুসলিম
লেখক | সাঈদ ইবনে আলী আল কাহতানী। |
প্রকাশনী | সবুজপত্র পাবলিকেশন্স |
বিষয় | দুআ ও যিকির,চিকিৎসা |
কুরআন-সুন্নাহ থেকে অনেক সংগৃহীত যিকর ও দো‘আ সংক্রান্ত এটি একটি র্নিরভুল ও নির্ভরযোগ্য সংকলনের অনুবাদ গ্রন্থ। এই গ্রন্থে কুরআন ও হাদিসের প্রতিটি জিকর ও দো‘আর সঙ্গে আপনাদের সুবির্ধাতে রেফারেন্স এখানে এর রেফারেন্স সহ বাংলা ভাষায় অনুবাদ ও বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই কিতাব থেকে আমরা রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দোয়া সম্পর্কে অনেক তথ্য দেয়া আছে এবং উনি কিভাবে দোয়া করেছে, সেই আদবও কায়দাও সুন্দর ভাবে বর্ণ।না করা রয়েছে। এতে জিকর ও দো‘আর পাশাপাশি কুরআন-সুন্নাহর আলোকে চিকিৎসা বিষয়ক একটি অধ্যায় যুক্ত করা হয়েছে। যা পেড়ে আপনারা অনেক উপকৃত হবেন ইনশাঅঅল্লাহ।
বই-০২ বেলা ফুরাবার আগে
লেখক | আরিফ আজাদ |
প্রকাশনী | সমকালীন প্রকাশনী |
বিষয় | আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা, দাওয়াহ, দ্বীনের পথে আহ্বান, নওমুসলিমদের জন্য |
বেলা ফুরাবার আগে বইয়ের নাম দিয়ে বোঝা যায় বইটার গুরুত্ব৷ কতটা। বেলা ফুরাবার আগে নিজেকে আবিষ্কারের একটি আয়না। যে ভুল -ভ্রন্তির মোহের অন্ধকারে যে অলিগলিতে আমাদের পদচারণা, তার বিপরীতে, জীবনের নতুন অধ্যায়ে নিজের নাম লিখিয়ে নিতে একটি সহায়ক গ্রন্থ হিসেবে এই “বেলা ফুরাবার আগে” বই অনেক উপকারে আসবে ইন শা আল্লাহ।মনভুলা একঝাঁক তারুণ্যের জন্য মুলত এই বইটি। যে ভুলের গভীরে তারা জীবনের বসন্তগুলোকে পার করছে, সেই ভুল থেকে তাদের ‘বেলা ফুরাবার আগে’ টেনে তুলতেই এই বইটার অবতারণা। মানুষকে সচেতন করতে সঠিক পথে চলতে।এমন বইয়ের অবদান অনেক।
বই-০৩ ইসলামী আকীদা
লেখক | ড. খোন্দকার আব্দুল্লাহ জাহাঙ্গীর (রহ) |
প্রকাশনী | আস-সুন্নাহ পাবলিকেশন্স |
বিষয় | ঈমান ও আকীদা |
তাওহীদ বা একত্ববাদে বিশ্বাস যেমন মানবজীবনে অত্যাবশ্যকীয় ঠিক তেমনি র্শিক বর্জনও ঈমানের অপরিহার্য বিষয়। আরবি ভাষায় আভিধানিকভাবে আকীদা শব্দটির অর্থ বিশ্বাস, এবং ঈমান শব্দটির আভিধানিক অর্থ হলো স্বীকৃতি দেওয়া, স্বীকার করা বা মেনে নেওয়া। অর্থাৎ কোন বিষয়ে বিশ্বাসের প্রকৃত নাম হলো আকীদা, আর কোন আকীদা বা বিশ্বাসকে স্বীকৃতি দেওয়ার নাম হলো তার উপর ঈমান আনা।
বই-০৪ আদর্শ মুসলিম
লেখক | ড. মুহাম্মাদ আলী আল হাশেমী |
প্রকাশনী | রুহামা পাবলিকেশন |
বিষয় | আদব, আখলাক, নওমুসলিমদের জন্য |
বইটাতে ১১টি অংশ আছে। প্রতিটি অংশে রয়েছে ছোট ছোট কতগুলো পরিচ্ছেদ। যা লেখার মুলভাবকে সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে।একজন আদর্শ মুসলিমের সব গুণাবলীই এই বইটিতে পাবেন ইনশাআল্লাহ। অনুবাদের ভাষা ও সহজবোধ্যতা করাই নজর কেড়েছে অধিক মাত্রায়। যেন একরকম স্নিগ্ধতার পরশ বুলিয়ে দেয়া হয়েছে বইটি পাতায় পাতায়।
বই-০৫ তিনিই আমার রব
লেখক | শাইখ আলী জাবের আল ফীফী |
প্রকাশনী | সমকালীন প্রকাশন |
বিষয় | আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা, নওমুসলিমদের জন্য |
আল্লাহ আমাদের সৃষ্টিকর্তা। তাঁর অসংখ্য নাম রয়েছে। এ নামগুলোকে বলা হয় ‘আল-আসমাউল হুসনা’ তথা আল্লাহর সুন্দর নামসমূহ।এই বইটি তে মহান আল্লাহ সুবাহান ওয়া’ তা’য়ালার দশটি মহান নামের ব্যাখ্যা খুব সুন্দর ও সাবলীলভাবে করা আছে।আল্লাহর নামগুলো না জানলে তো আমরা মরুভূমিতে পথহারা লোকের মতো দিশেহারা হয়ে যাবো। মরুভূমির গনগনে রোদে আমাদের দিনগুলো, আমাদের ‘আমলগুলো ঝলসে যাবে। ফলে অন্তরে সারাক্ষণ বিরাজ করবে দুশ্চিন্তা অস্থিরতা। সবচেয়ে আপন হিসেবে আমাদের আল্লাহকেই বেছে নিতে হবে। তাঁর উপর ঈমান আনতে হবে- তাঁরই সামনে নত হয়ে, আল্লাহকে খুশী করার চেষ্টা করলে আমরা সুখী হতে পারবো। আমাদের ভাগ্যের দুয়ার খুলে যাবে।
বই-০৬ টাইম ম্যানেজমেন্ট
লেখক | ইসমাইল কামদার |
প্রকাশনী | সিয়ান পাবলিকেশন |
বিষয় | আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা, প্রোডাক্টিভিটি |
সময় খুবই দামি একটা সম্পদ আমাদের প্রত্যেকের কাছেই। একে তাই ধার্মিকতার কাজে লাগানো উচিত। আমরা এই সময় টা কত হেলায় কাটিয়ে দিচ্ছি দিনের পর দিন। এই সময় কে তো ধরে রাখার ক্ষমতাও আমাদের নেই। তাহলে সময়কে কিভাবে ধরে রাখা যায়! সময়কে ধরে রাখতে চাইলে এর সদ্ব্যবহার করা শিখতে হবে । আমি আশা করবো আপনারা এই বইটি একবার হলেও পড়েবেন। হতাশ হবেন না ইনশাআল্লাহ্। বই টি পড়ে নিজের সময় নষ্ট করার অনেক কারণ খুঁজে পাবেন এবং পরবর্তীতে আর এভাবে সময় নষ্ট হবেনা । এই বইটি পড়লে টাইমের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন
বই-০৭ রাসূলের চোখে দুনিয়া
লেখক | ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল |
প্রকাশনী | মাকতাবাতুল বায়ান |
বিষয় | সুন্নাত ও শিষ্টাচার, যুহদ বিষয়ক বই |
দুনিয়া এক রহস্যময় জায়গা। এখানে মানুষ আসে। শৈশব, কৈশোর আর তারুণ্যের সিড়ি বৃদ্ধ হয়। তারপর হঠাৎ একদিন চলে যায়। বইটি পড়লে দুনিয়ার সকল মোহ কেটে যাবে।আখিরাতের চেতনা বাড়বে। সকল মুসলিম ভাইদের বইটি পড়া উচিত। দুনিয়ার সাথে সত্যিকার সম্পর্ক কী? দুনিয়ার ব্যাপারে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত? প্রকৃত সফলতা কিসের মধ্যে লুকায়িত? নবী রাসূলদের জীবনী থেকে এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে ইমাম আহমদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) রচিত এক অনুবাদ গ্রন্থ ‘রাসূলের চোখে দুনিয়া’ বইটি পড়েতে হবে।
বই-০৮ সাহাবিদের চোখে দুনিয়া
লেখক | ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বাল |
প্রকাশনী | মাকতাবাতুল বায়ান |
বিষয় | আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা, যুহদ বিষয়ক বই |
নবি-সাহাবিদের চোখে এই দুনিয়া ঠিক কেমন ছিল এই বিষয়কে কেন্দ্র করে যারা কিতাব রচনা করে গিয়েছেন তাদের মাঝে ইমাম আহমাদ ইবনু হাম্বাল অন্যতম। তার রচিত সাড়ে ১১শত বছর পূর্বের “কিতাবুয যুহদ” এর অনুবাদ হিসেবে ইতোপূর্বেই প্রকাশিত হয়েছে প্রথম খন্ড “রাসূলের চোখে দুনিয়া”। তারই ধারাবাহিকতায় এবার আসছে দ্বিতীয় খন্ড “সাহাবিদের চোখে দুনিয়া”। সলামে বৈরাগ্যবাদের কোনো স্থান নেই। তবে যুহুদ-এর গুরুত্ব অপরিসীম। ইসলামকে যদি উপলব্ধি করতে চাই তবে অবশ্যই জানতে হবে সাহাবিরা কোন চোখে এই দুনিয়াকে দেখেছেন,জেনেছেন কোন দৃষ্টিভঙ্গির কারণে দুনিয়া ও আখিরাতে সফলদের অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন।
বই-০৯ তাবিয়িদের চোখে দুনিয়া
লেখক | ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহঃ) |
প্রকাশনী | মাকতাবাতুল বায়ান |
বিষয় | আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা, যুহদ বিষয়ক বই |
এটা “কিতাবুয যুহদ্” এর বাংলা সংস্করন। সাথে হাদিসের কিছু সোর্স বর্ননা করা হয়েছে। দুনিয়াকে যদি রাসূল (সাঃ)এর চোখে, সাহাবিদের চোখে কিংবা তাবিয়িদের চোখে দেখতে চান? সাহাবি-তাবিয়িগণ দুনিয়ার বিষয়ে কেমন ছিলেন? তাদের চোখে দুনিয়া কেমন ছিল? তাদের জীবন থেকে সংরক্ষিত মণিমুক্তাগুলোর সমন্বয়ে হাজার বছর আগে ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল (রহ.) রচনা করে গেছেন ‘কিতাবুয যুহুদ’ যার শেষ অংশ বা তৃতীয় খন্ডের বাংলারূপ ‘তাবিয়িদের চোখে দুনিয়া’।
বই-১০ প্রোডাক্টিভ মুসলিম
লেখক | মোহাম্মাদ ফারিস |
প্রকাশনী | গার্ডিয়ান পাবলিকেশন্স |
বিষয় | আত্মশুদ্ধি ও অনুপ্রেরণা, নওমুসলিমদের জন্য, প্রোডাক্টিভিটি |
‘প্রোডাক্টিভ মুসলিম’ একটি আত্ম-উন্নয়নমূলক বই। এই বইটির পাতায় পাতায় মুখর হয়ে উঠেছে আত্ম-জাগরণ, আত্মনির্মাণ ও আত্মবিকাশের বিভিন্ন দিক যা নিয়ে জীবনঘনিষ্ট আলোচনার এক মহা আসর। এতে আছে স্রষ্টার দেওয়া অমূল্য উপহার। নিজেকে এক নতুন পৃথিবীর স্বপ্নদ্রষ্টা এবং একনিষ্ঠ কারিগর হিসেবে গড়ে তোলার বাস্তবধর্মী কর্মকৌশল। ইসলামের শিক্ষা এবং আধুনিক জ্ঞানবিজ্ঞানের মিশ্রণে রচিত এই বইটিতে যে প্রোডাক্টিভ লাইফ-স্টাইলের নমুনা তুলে ধরা হয়েছে, যা একজন মানুষকে পার্থিব জীবনের সাফল্যের শেকড় ছুঁয়ে দিয়ে নিজেকে পরকালীন জীবনের শিখরে পৌঁছে দিতে এক উজ্জল আলো হয়ে পথ দেখাবে।
উপসংহার
উপরে উল্লিখিত বইগুলো হলো ”সেরা ১০টি ইসলামিক বই” যার গুরুত্ব অপরিসীম এবং আপনার জীবনে একবার হলেও অবশ্যই পড়া উচিত। এইবইগুলো আপনি পড়লে, বুঝলে এবং সঠিকভাবে নিজ জীবনে প্রয়োগ করলে একজন সফল সৌভাগ্যভান মুসলিমে পরিণত হবেন ইনশা আল্লাহ্। এই রকম সুন্দর সুন্দর ইলামিক বই সর্ম্পকে জানতে আমাদের সাথে থাকুন। এবং আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। আসসালামুআলাইকুম।